ঢাকা, সোমবার   ২০ মে ২০২৪

অন্য শিশুদের দুগ্ধ পান করিয়ে আলোচনায় মার্কিন মা 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২৩:২২, ৩০ আগস্ট ২০১৮

তিনি যেন সাক্ষাৎ মা মেরি। বলা যেতে পারে মাদার তেরেসার অবতারও। তার নিজের তিন শিশু সন্তান আছে। দুই কন্যা এবং এক পুত্র। কিন্তু এরপরও তিনি অগণিত শিশুর মা।

আক্ষরিক অর্থেই স্তন্যদানকারী মা। তার অসামান্য কীর্তির জন্যই তিনি আজ মার্কিন মুলুকে আলোচনার কেন্দ্রে, খবরের শিরোনামে এবং নেটদুনিয়ায় ভাইরাল।     

তিনি হলেন তাবিটা ফ্রস্ট। বয়স ২৯। সোনালি চুলের দোহারা চেহারার এক স্বাস্থ্যবতী মা। দিনভর সংসারের কাজে ব্যস্ত থাকা। কিন্তু তার অসাধারণত্ব তো অন্যখানে। অসাধারণত্ব তার ‘মাতৃদুগ্ধে’।  

বলা ভাল, অফুরন্ত মাতৃদুগ্ধে। অফুরন্ত মানে মাত্রাতিরিক্ত। যে মাতৃদুগ্ধ প্রাণ বাঁচাচ্ছে, তৃষ্ণা মেটাচ্ছে এবং পুষ্ট করছে নাম না জানা অসংখ্য বাচ্চাকে। না অর্থের বিনিময়ে নয়। তিনি দান করছেন তার বুকের অতিরিক্ত দুধকে।

আসলে সদ্য মা হয়েছেন তাবিটা ফ্রস্ট। মেয়ের বয়স আট মাস। সন্তান জন্ম দেওয়ার পরেই এই মার্কিন নারী এক রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। যাতে তার বুকের দুধের পরিমাণ স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এই রোগের নাম ‘হাইপারল্যাকটেশন সিনড্রোম’।

তাবিটার ভাষায়, নিজের সন্তানকে স্তন্যপান করানোর পরেও অনেক বেশি মাত্রায় অবশিষ্ট থাকে তার বুকের দুধ। এই সিনড্রোমে আক্রান্ত হওয়ার পর প্রতিদিন তার ব্রেস্ট মিল্ক তৈরি হয় প্রায় তিন লিটারেরও বেশি। প্রতি তিন ঘণ্টা অন্তর সেই দুধ পাম্প করে বার করার প্রয়োজন পড়ে তাবিটার। তাই অতিরিক্ত দুধ তিনি দান করারই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তা খেয়ে বাঁচছে অনেক মাতৃহারা, অপুষ্টিতে ভোগা শিশুরা।

এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪৭০ লিটার বুকের দুধ দান করেছেন তাবিটা। আর এটাই নাকি এখন তার অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ায় এক সাক্ষাৎকারে তাবিটা জানিয়েছেন, জন্মের পরেই মাকে হারিয়েছে অথবা মায়ের স্নেহ থেকে বঞ্চিত এমন অনেক শিশুই রয়েছে।

বর্তমানে গোটা বিশ্ব জুড়েই চালু হয়েছে মাতৃদুগ্ধের নানা ব্যাংক। শিশুকে খাওয়ানোর পর অতিরিক্ত বুকের দুধ সেখানে বিক্রি করেন অনেক মহিলাই। তবে তাবিটা তার বুকের দুধ বিক্রি করেন না, তিনি পুরোটাই দান করে দেন আরও অনেক শিশুদের জন্য।

তাবিটা বলেছেন, ‘‘কোনও পরিস্থিতিতেই আমি এই কাজটা বন্ধ করি না। ছুটিতে গেলে বা শরীর খারাপ হলেও নিয়মিত আমি আমার বাড়তি ব্রেস্টমিল্ক পাম্প করে জমা রাখি। আমি চাই এই দুধে প্রাণ বাঁচুক আরও অনেক শিশুর।’’ তাছাড়া, অনেক মায়ের বুকে দুধ হয় না। আমার বুকের বাড়তি দুধ তাদের কাজে লাগবে।

চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা মনে করছেন, মায়ের শারীরিক গঠন, জন্মের পরে শিশুর ওজন এবং তার ব্রেস্ট মিল্কের চাহিদার উপর বুকে দুধ তৈরি হওয়ার ব্যাপারটি অনেকটাই নির্ভর করে। তাবিটার ক্ষেত্রে এগুলির সবই বেশি। তার উপর তার জিনের গঠনও দায়ী।

এমএইচ/এসি   

 


Ekushey Television Ltd.





© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি